ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা

ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন!

ধরেন, আপনি একটা অজানা শহরে ভ্রমণ করছেন। সেখানকার রাস্তাঘাট আপনার অচেনা, মানুষজন অপরিচিত। এমন অবস্থায় আপনি কি সাবধান থাকবেন না? অবশ্যই থাকবেন! ঠিক তেমনি, ডিজিটাল জগতেও আপনার নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য কিছু নিয়ম কানুন জানা এবং মেনে চলা প্রয়োজন।

এই অধ্যায়ে আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সম্পর্কে জানবো এবং কিভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হয়, সেটা শিখবো।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি ও সংরক্ষণ:

  • শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কি?

    • অন্তত ৮ টি অক্ষর থাকতে হবে।

    • বড় হাতের এবং ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিশেষ চিহ্ন (!@#$%^&*) ব্যবহার করতে হবে।

    • আপনার নাম, জন্ম তারিখ, বা অন্য কোন সহজে অনুমান করা যায় এমন তথ্য পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না।

  • কিভাবে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করবেন?

    • পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারেন।

    • কাগজে লিখে রাখবেন না।

    • একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করবেন না।

  • নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন: ৩-৬ মাস অন্তর অন্তর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাই ভালো।

ফিশিং এবং ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা:

  • ফিশিং কি?

    • ফিশিং হলো এক ধরনের অনলাইন প্রতারণা, যেখানে প্রতারকরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন - পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের নম্বর) চুরি করার জন্য ভুয়া ইমেইল বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে।

  • কিভাবে ফিশিং থেকে বাঁচবেন?

    • অপরিচিত ইমেইল এবং লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।

    • কোন ওয়েবসাইটে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে সেটি সুরক্ষিত (HTTPS) কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন।

    • আপনার ব্যাংক বা অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কখনো ইমেইলে আপনার পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য গোপন তথ্য চাইবে না।

  • ম্যালওয়্যার কি?

    • ম্যালওয়্যার হলো ক্ষতিকর সফটওয়্যার যা আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল নষ্ট করতে পারে বা আপনার তথ্য চুরি করতে পারে।

    • ভাইরাস, ট্রোজান হর্স, স্পাইওয়্যার ইত্যাদি হলো ম্যালওয়্যারের উদাহরণ।

  • কিভাবে ম্যালওয়্যার থেকে বাঁচবেন?

    • অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।

    • অপরিচিত ওয়েবসাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড করবেন না।

    • নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করুন।

অনলাইন লেনদেনে নিরাপত্তা:

  • অনলাইনে কেনাকাটা করার সময় সুরক্ষিত ওয়েবসাইট (HTTPS) ব্যবহার করুন।

  • আপনার ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য যেখানে-সেখানে দেবেন না।

  • নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করুন।

ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা:

  • সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা ভালো।

  • আপনার প্রোফাইলের গোপনীয়তা সেটিংস (privacy settings) ঠিক করে রাখুন।

  • অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব না করা ভালো।

সাইবার বুলিং থেকে বাঁচার উপায়:

  • সাইবার বুলিং হলো অনলাইনে অন্যদের হয়রানি বা অপমান করা।

  • যদি কেউ আপনাকে অনলাইনে হয়রানি করে, তাহলে সেটা কাউকে জানান (যেমন - আপনার বাবা-মা, শিক্ষক, বন্ধু)।

  • সাইবার বুলিংয়ের প্রমাণ সংরক্ষণ করুন (যেমন - স্ক্রিনশট)।

  • সাইবার বুলিং থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ব্যবস্থা (safety features) ব্যবহার করুন।

মনে রাখবেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা আপনার নিজের হাতে। সচেতন থাকুন এবং সাবধান থাকুন।

Last updated