ভ্যারিয়েবল: তথ্য সংরক্ষণের মৌলিক হাতিয়ার
Last updated
Last updated
প্রথমেই একটু স্কুল জীবনের গণিতের কথা মনে করি। ধরুন, আপনাকে বলা হলো a = 5
এবং b = 10
, তাহলে a × b
এর মান কত? সহজেই উত্তর হবে 5 × 10 = 50
। এখানে a
এবং b
হলো চলক, যেগুলো আমরা ইংরেজিতে ভ্যারিয়েবল বলি।
প্রোগ্রামে ভ্যারিয়েবল অনেকটা একটা বাক্সের মতো কাজ করে। যেমন, বাক্সে বিভিন্ন জিনিস রাখা যায়, ঠিক তেমনি ভ্যারিয়েবলে ডেটা সংরক্ষণ করা যায়। ভ্যারিয়েবল আর এর মানের মধ্যে একটি ইক্যুয়াল (=) চিহ্ন থাকে। ইক্যুয়াল সাইনটি বোঝায়, ডানপাশে যে মানটি দেওয়া হয়েছে তা বামপাশের ভ্যারিয়েবলে সংরক্ষিত হয়েছে।
ভ্যারিয়েবল হলো ডেটা ধারণ করার একটি পদ্ধতি, যা প্রোগ্রামিং এবং ডেটা অ্যানালাইসিসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি দুইটি প্রধান ভাগে বিভক্ত: Numeric (সংখ্যাভিত্তিক) এবং Categorical (শ্রেণীভিত্তিক)। চলুন প্রতিটি ভাগ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা যাক।
১. Numeric (সংখ্যাভিত্তিক ভ্যারিয়েবল):
সংখ্যাভিত্তিক ভ্যারিয়েবল হলো এমন ডেটা, যা সংখ্যার আকারে প্রকাশ করা হয় এবং এর উপর গাণিতিক কার্যক্রম (যেমন: যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ) প্রয়োগ করা যায়। এটি দুই ভাগে বিভক্ত:
ক) Continuous (অবিচ্ছিন্ন):
অর্থ: এই ডেটাগুলি ধারাবাহিক মান ধারণ করে, যা একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জে যেকোনো মান হতে পারে।
উদাহরণ: উচ্চতা (৫.৭ ফুট), ওজন (৬৫.৪ কেজি), তাপমাত্রা (৩০.৫ ডিগ্রি)।
বৈশিষ্ট্য: নির্দিষ্ট পরিমাণ সীমার মধ্যে মানের সংখ্যা অসীম হতে পারে।
খ) Discrete (বিচ্ছিন্ন):
অর্থ: এই ডেটাগুলি নির্দিষ্ট এবং আলাদা মান ধারণ করে, যা সাধারণত পূর্ণসংখ্যা হয়।
উদাহরণ: ছাত্রদের সংখ্যা (২৫ জন), গাড়ির সংখ্যা (৫ টি), কলা গাছের সংখ্যা (১২ টি)।
বৈশিষ্ট্য: মান গুনতে পারা যায় এবং এটি ধারাবাহিক নয়।
২. Categorical (শ্রেণীভিত্তিক ভ্যারিয়েবল):
শ্রেণীভিত্তিক ভ্যারিয়েবল হলো এমন ডেটা, যা বিভিন্ন শ্রেণী বা বিভাগে বিভক্ত। এটি সংখ্যা নয়, বরং শ্রেণী বা গুণ প্রকাশ করে। এটি দুই ভাগে বিভক্ত:
ক) Ordinal (ক্রমবাচক):
অর্থ: এই ডেটাগুলির মধ্যে একটি ক্রম বা শৃঙ্খলা থাকে, যা মানের মধ্যে সম্পর্ক নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
শিক্ষা স্তর: প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক।
সন্তুষ্টির স্তর: অসন্তুষ্ট, মাঝারি, সন্তুষ্ট।
বৈশিষ্ট্য: ক্রম থাকে, তবে গাণিতিক ব্যবধানের মান সমান নয়।
খ) Nominal (নামমাত্র):
অর্থ: এই ডেটাগুলির মধ্যে কোনো ক্রম বা শৃঙ্খলা থাকে না, শুধুমাত্র বিভাগ নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
রঙ: লাল, নীল, সবুজ।
শহরের নাম: ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট।
বৈশিষ্ট্য: ক্রমবাচকতা নেই, শুধুমাত্র আলাদা শ্রেণী নির্দেশ করে।
ভ্যারিয়েবলের এই শ্রেণীবিন্যাস আমাদের ডেটা বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সঠিক মডেল ও পদ্ধতি নির্বাচন করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ:
Continuous ডেটা: রিগ্রেশন মডেল ব্যবহারের উপযোগী।
Categorical ডেটা: শ্রেণীকরণ বা ক্লাসিফিকেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এই প্রকারভেদের মাধ্যমে আমরা ডেটা বিশ্লেষণ আরও কার্যকরভাবে করতে পারি।
ডেটা সংরক্ষণ করা: প্রোগ্রামে যেকোনো তথ্য রাখার জন্য ভ্যারিয়েবল ব্যবহার করা হয়।
ডেটা ব্যবস্থাপনা: ভ্যারিয়েবল দিয়ে বিভিন্ন ডেটার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
ডেটার পুনঃব্যবহার: একই ভ্যারিয়েবল একাধিকবার ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করা সম্ভব।
ভ্যারিয়েবল লেখার সময় কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়:
ভ্যারিয়েবলের নাম অবশ্যই একটি অক্ষর (a-z, A-Z) বা আন্ডারস্কোর (_) দিয়ে শুরু করতে হবে।
নামের মধ্যে সংখ্যা থাকতে পারে, তবে শুরুতে সংখ্যা ব্যবহার করা যাবে না।
কিছু বিশেষ চিহ্ন যেমন @, $, % ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
পাইথনের নির্দিষ্ট শব্দ যেমন if
, else
, while
ব্যবহার করা যাবে না।
ধরুন, আপনাকে একটি বন্ধুর নাম সংরক্ষণ করতে হবে।
এখানে friend_name
হলো ভ্যারিয়েবল, এবং এর মধ্যে "Rahim" নামটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। আপনি পরবর্তীতে এই ভ্যারিয়েবলের মান পরিবর্তন করতে পারেন।
এটি প্রিন্ট করবে "Karim"।
ডেটা সংরক্ষণ সহজ হয়।
বড় কাজ ছোট ছোট ধাপে বিভক্ত করা যায়।
প্রোগ্রামিং আরও কার্যকর হয়।
Python থেকে শুরু করে Java এবং Scratch, সব ভাষায় ভ্যারিয়েবলের ধারণা একই। Python-এ আমরা সরাসরি ডেটা অ্যাসাইন করি, Scratch-এ ভিজ্যুয়াল ব্লকের মাধ্যমে একটি ভ্যারিয়েবল তৈরি করা হয়।